লাভইজম কী? What is Loveism?

লাভইজম কী? What is Loveism?

আবার বেশিরভাগ মানুষ পরিপূর্ণ জীবনকে বাঁচে না; অতি সামান্য বা খন্ডাংশ হয়ে বাঁচে। অর্থাৎ জীবনের ব্যাপকতা বা অমিত সম্ভাবনাকে উপলব্ধি না করে শুধু শরীর, মন বা আবেগ হয়ে বাঁচে। যা মানুষের দ্বিধা- দ্বন্দ্ব, সিদ্ধান্তহীনতা, বিচ্ছিন্নতাবোধ, অস্তিত্বের সংকট সহ সবধরণের মনোবৈকল্যের কারণ। যার কুপ্রভাব শুধু ব্যক্তি আর পরিবার নয় সর্বত্র দৃশ্যমান।

তাই লাভইজম ব্যক্তিকে রূপান্তরের কথা বলে। রূপান্তরিত মানুষ ছাড়া আনন্দময় পৃথিবী সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যে লাভইজম প্রথমেই ব্যক্তির ভিতরের খন্ডিত অংশগুলোর সীমানাকে ভেঙে দেয়। শরীর, মন, আবেগ ও প্রাণশক্তি আর তাদের নিজ নিজ বলয়ে থেকে তাদের নিজস্ব আচরণ করতে পারে না। এই চারটি মাত্রা নত হয়ে আসে, আনুগত্য করে এবং এক নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বিনয়ের সাথে রূহ বা রাজার হুকুম তামিল করে। দেহ মন প্রাণের এই সম্মিলিত ঐক্যবদ্ধতা এমন এক শক্তির জাগরণ ঘটায় যা  জীবনের সর্বোচ্চ সম্ভাবনাকে স্পর্শ করতে পারে। অর্থাৎ মহান সৃষ্টিকর্তা যিনি সমস্ত কিছুর মূল ভিত্তি তাঁকে চিনতে পারে, তাঁর সাথে ফানা হতে পারে। শক্তির এই চরম জাগরণকে আমরা ” সোনার মানুষে রূপান্তর” বলছি। আর এই রূপান্তর প্রত্যেকটা মানুষের পক্ষে ঘটানো সম্ভব। এই অমিত সম্ভাবনাকে সবার আয়ত্তে আনতে লাভইজম এক অব্যর্থ প্রযুক্তি।

 

পৃথিবীতে প্রেমের নামে সুদীর্ঘকাল ধরে যা চলছে তা মূলত প্রেম নয়, প্রেমরোগ। এবং এই একটি রোগ বলতে গেলে পৃথিবীর প্রায় সকল সমস্যার মূলে। কেউ ভালোবাসি বলে যৌনতা চরিতার্থের লাইসেন্স নিয়ে নিচ্ছে অথবা প্রেমের নামে পরিবারে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করছে। মানুষ প্রেমে সফল হলে স্লো পয়জনে আক্রান্তের মত ধীরে ধীরে মরে আর ব্যর্থ হলে তো কথায় নেই ডাইরেক্ট মরতে চাই বা মরে। প্রেম মানুষকে অন্ধ করে দেয় তাই প্রেমীর ন্যায়-অন্যায় বেশিরভাগ মানুষ দেখতে পায় না। অথবা দেখলেও প্রশ্রয় দেয়, সহ্য করে নেয় একসময় সব ধৈর্যসীমা পার হলে সংঘাতও বাধে। অনেকে আবার প্রেমের নামে সারাজীবন পুরোদস্তুর গোলামী করে। অনেকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে মানুষকে গোলাম করে রাখে। মানুষ দুনিয়াবি খায়েশ যথা-কাম ক্রোধ লোভ মদ মোহ মাৎসর্যকে প্রেমের নামে চালায়। প্রচলিত প্রেম মূলত মানুষের অসীম চাওয়ার এক খিচুড়ি। মানুষ যা কিছু চায় তারই প্রেমে পড়ে এবং নিজেকে যন্ত্রণা দেয়। আর  আশেপাশের মানুষগুলো তার মাশুল গোনে। তথাকথিত এই প্রেমের জঘন্য অত্যাচার থেকে মানুষকে মুক্ত করতে Love এর সাথে তিনটি অক্ষর(ism) আমাকে যুক্ত করতে হয়েছে। যা Love এর সমস্ত ক্ষতি এবং এর মায়াবী পিঞ্জর থেকে মানুষকে মুক্ত করে।

তথাকথিত এই প্রেমের জঘন্য অত্যাচার থেকে মানুষকে মুক্ত করতে Love এর সাথে তিনটি অক্ষর(ism) আমাকে যুক্ত করতে হয়েছে।

Loveism  কোনো মতবাদ নয়। নিজেতে প্রত্যাবর্তনের বিজ্ঞান। কীভাবে একজন মানুষ তার বর্তমানের হাজারটা পরিচয় মুছে ফেলে শুধু মানুষ পরিচয়ে চূড়ান্তভাবে চিহ্নিত হবে তারই নিখুঁত প্রযুক্তি হল Loveism. হাজারো আকাঙ্ক্ষার মায়াবী অখাদ্য ফেলে মানুষকে অমৃতের পানে নিতেই Loveism এর জন্ম হয়েছে। এখনই সময় Loveism  এ দীক্ষিত হওয়ার কারণ নিজেতে প্রত্যাবর্তনের এটাই সবচেয়ে সহজ রাস্তা।

Loveism এ দীক্ষিত হলে ব্যক্তি হঠাৎই এক ভিন্ন মাত্রায় স্পন্দিত হয়। মানুষ হওয়া যে কী এক অনন্য ঘটনা তা সে মুহুর্তে বুঝতে পারে। আত্মসংরক্ষণ ও প্রজননের তুচ্ছ কুহক তার কেটে যায় সে জীবনের উচ্চ তলায় পৌঁছে যায়। এ পর্যায়ে এসে সে কাউকে “ভালোবাসি”বলে নিজের বাসনা চরিতার্থ করতে চায় না। ভালোবাসাকে হাতিয়ার বানিয়ে অন্যের থেকে সুখ নিংড়ে নেওয়ার চেষ্টা সে করে না। সে I Love You বলে আর ছলা কলার পথে হাঁটে না বরং পরমানন্দে ভেসে গিয়ে বলে” I am the Love — আমিই প্রেম।” সে তখন নিজের চিত্তের প্রসন্নতা, খুশি, আনন্দ সবার সাথে ভাগ করে নেয়। যায় আসে না যার সাথে ভাগ করে নিচ্ছে সে কেমন মানুষ। কারণ কোনো কদর্যতাই আর তাকে স্পর্শ করতে পারে না। এই যে ব্যক্তির স্বয়ং প্রেম হয়ে উঠা এটাই Loveism.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *